কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে এবং মালদ্বীপ এককভাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা গণহত্যার মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার আর্ন্তজাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) আবেদন করেছে। গতকাল আইসিজের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইসিজে জানিয়েছে, এসব দেশ ১৯৪৮ সালের গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও সাজাবিষয়ক সনদের স্বাক্ষরকারী হিসেবে এই মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার অধিকার রাখে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্য বলেছে, সনদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অভিন্ন স্বার্থে তারা এই মামলায় অর্ন্তভুক্ত হওয়ার অধিকার প্রয়োগ করতে চায়।
মালদ্বীপ বলেছে, ‘রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বর্বর আক্রমণ অব্যাহত থাকায়’ তাদের গভীর উদ্বেগ থেকে এবং একই সঙ্গে আর্ন্তজাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে গণহত্যা প্রতিরোধ ও এই অপরাধে শাস্তিবিধানের অভিপ্রায়ে তারা মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইসিজের বিধি অনুযায়ী, গণহত্যা সনদের আওতায় মামলা হলে মামলায় পক্ষ না হলেও সনদে স্বাক্ষরকারী অন্য যেকোনো দেশ শুনানিতে পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করতে পারে। এই মামলায় আদালত যে রায় দেবেন, তা পক্ষভুক্ত হওয়া দেশগুলোর ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য হবে।
২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর গাম্বিয়া গণহত্যা সনদ লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্ন্তবর্তী আদেশের জন্য আইসিজেতে আবেদন করে। এরপর আদালত শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি গণহত্যার ঝুঁকি থেকে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়াসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে অর্ন্তবর্তী আদেশ দেন। সে সময় আদালত গণহত্যার অভিযোগের সব স্বাক্ষ্যপ্রমাণ সংরক্ষণেরও নির্দেশ দেন।
এরপর গণহত্যার অভিযোগ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে মামলার আরজি ও তার জবাব লিখিতভাবে পেশ করতে সময় নির্ধারণ করে দেন আদালত। গাম্বিয়া ২০২০ সালের ২৩ অক্টোবরের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে আরজি পেশ করে। কিন্তু মিয়ানমার ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি আদালতের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে মামলা করে। আদালত ওই আবেদনের ওপরও শুনানি গ্রহণ করেন। ২০২২ সালের ২২ জুলাই আদালত রায় দেন, মামলাটি আইসিজের গ্রহণের এখতিয়ার আছে।